সাম্প্রতিক অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দেশের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে গবাদিপশু, হাঁসমুরগি ও দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সংরক্ষণ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শান্তিপ্রিয় দিনাজপুর জেলার বেশীরভাগ মানুষের পেশা কৃষি হলেও অনেকেই জীবন জীবিকা নির্বাহ করে গবাদিপশু ও হাঁস মুরগী পালন করে। প্রাণিসম্পদে সমৃদ্ধ এই জেলায় রয়েছে ১৬৭১২১৪ টি গরু, ৩১৩২ টি মহিষ, ১০১০১৫৮টি ছাগল, ১৪০৮৪৯টি ভেড়া ছাড়াও প্রচুর হাঁস মুরগী। তাছাড়া এই জেলায় দুগ্ধ খামার রয়েছে ১১২৯টি,ছাগল খামার ৫৯৯টি,ভেড়ার খামার ৩৩০টি, লেয়ার মুরগী খামার ৩৪১ টি,ব্রয়লার খামার ৮৩০ টি, প্যারেন্টস্টক খামার ১১টি, গ্রান্ড প্যারেন্টস্টক খামার ০৩টি, হাঁসের খামার রয়েছে ৪৩৭ টি এবং ৩১ টি হ্যাচারী। তাছাড়া গড়ে উঠেছে ২৯টি কোয়েল এবং ১২৬টি টার্কি খামার। জনসংখ্যার প্রায় ২০% প্রত্যক্ষ এবং ৫০% পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদ খাতের ওপর নির্ভরশীল। অধিকন্ত প্রাণিজ আমিষের প্রধান উৎস মাংস, দুধ ও ডিমের উৎপাদন বিগত তিন বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্য মাংস ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এই জেলা। চাহিদার তুলনায় দুধ উৎপাদনের পরিমান কম হলেও খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে এই শিল্প। আশা করা যায় অতি অল্প সময়েই দুধেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে দিনাজপুর জেলা। বর্তমানে মাংস, দুধ ও ডিমের জন প্রতি প্রাপ্যতা বেড়ে যথাক্রমে ১৯৮ গ্রাম/দিন, ১৬২ মি.লি/দিন ও ১২৮ টি/বছর এ উন্নীত হয়েছে যা দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মাঠ পর্যায়ে গবাদিপশু ও হাঁস মুরগীর চিকিৎসা সেবা গ্রহণ সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প/কর্মসূচীর মাধ্যমে খামারী প্রশিক্ষণ, ঘাস চাস সম্প্রসারণসহ লাগসই প্রযুক্তি হস্তাস্তর কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের ভিশন-২১ এবং ৪১ অর্জনে সচেষ্ট প্রাণিসম্পদ দপ্তর দিনাজপুর।
বিগত তিন বছরে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর দিনাজপুরের অর্জনসমূহ নিম্নরূপ:
উৎপাদিত পণ্য |
২০১৭-১৮ |
২০১৮-১৯ |
২০১৯-২০ |
মাংস ( মেট্রিক টন) |
১৪০৩৫৫ |
২৩৯৭১৫ |
২৩২৮৭৬ |
দুধ (মেট্রিক টন) |
১২০৯৪৮ |
১৯০১০১ |
১৯০৫৬১ |
ডিম (টি) |
৩৪৪১৩৭৪১৯ |
৪০,০০,০০০০০ |
৪১৭৪৮৮৭৬০ |
সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জসমূহঃ
গবাদিপশুর গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্যের অপ্রতুলতা, রোগের প্রাদুর্ভাব, সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থার অভাব, প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব, সচেতনতার অভাব, প্রণোদনামূলক উদ্যোগের অভাব, উৎপাদন সামগ্রীর উচ্চ মূল্য, যথাযথ বিপনণ ব্যবস্থা না থাকা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সীমিত জনবল ইত্যাদি প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
ভিশন ২০২১ অনুযায়ী জনপ্রতি দুধ, মাংস ও ডিমের চাহিদার লক্ষমাত্রা যথাক্রমে ১৫০ মিলি/দিন, ১১০ গ্রাম/দিন ও ১০৪টি/বছরে ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে। গবাদিপশু ও পাখির রোগ নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি, চিকিৎসা সেবার গুণগত মান উন্নয়ন এবং রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার স্থাপন। দুগ্ধ ও মাংসল জাতের গরু উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে গরু-মহিষের জাত উন্নয়ন। পশু খাদ্যের সরবরাহ বাড়াতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ, টিএমআর প্রযুক্তির প্রচলন ও পশু খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন। তা’ছাড়া প্রাণিসম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষের নিরাপত্তা বিধান, আপামর জনগোষ্ঠীর নিরাপদ প্রাণিজ পুষ্টির চাহিদাপূরণ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও অভিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর অংশ গ্রহণের মাধ্যমে কাঙ্খিত আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।
২০২০- ২১ অর্থ বছরে জেলার সম্ভাব্য অর্জনঃ
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস